হাট্টিমাটিম ছড়ার কিছু আজানা তথ্য

২০১৮ সালে শেষের দিকে সামাজিক ম্যাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্ট ভাইরাল হয় যেখানে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাইকে বিখ্যাত ‘হাট্টিমা টিম্ টিম্’ ছড়াটির লেখক দাবি করার পাশাপাশি মূল ছড়াটি ৫২ পঙ্ক্তির দাবি করা হয়।

এই ছড়াটি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির মূল কারণটি হলো ‘হাট্ টিমা টিম’ নামে রোকনুজ্জামান খানের লেখা একটি ছড়ার বই আছে এবং সেই বইতে “হাট্ টিমা টিম” নামে তার লেখা একটি ছড়াও আছে যেটা সাথে মূল ‘হাট্টিমা টিম্ টিম্’ ছড়ার কোনো মিল নেই। রোকনুজ্জামান খানের লেখা এই ছড়ার বইটি ১৯৬২ সালে কাকলী প্রকাশনী থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়। যা লেখকের প্রকাশিত তৃতীয় এবং প্রথম ছড়াগ্রন্থ। প্রচ্ছদ শিল্পী ছিলেন হাশেম খান। ১৯৭৫ সালে মুক্তধারা থেকে ২য় সংস্করণ এবং ১৯৯৭ সালে ব্রাক থেকে বহুরঙা প্রচ্ছদপট ও অঙ্গসজ্জায় বইটির ৩য় সংস্করণ বের হয়; এই দুই সংস্করণেও রয়েছে শিল্পী হাশেম খানের ছোঁয়া। ভাইরাল পোস্টের লেখক এই দুটো বিষয়কে একসাথে ফেলেছিলেন।

৫২ পঙ্​ক্তির আসল লেখক যুক্তরাজ্য প্রবাসী নাদিয়া জামান। ২০১২ সালে তিনি সামহোয়্যার ইন ব্লগে পঙ্​ক্তিগুলি প্রকাশ করেন। তিনি ৪৮ পঙ্​ক্তি নিজে লিখে শেষের ৪ পঙ্​ক্তিতে প্রচলিত ‘হাট্টিমা টিম্ টিম’ ছড়াটি জুড়ে দেন।

১৯৬২ সালে কাকলী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত
রোকনুজ্জামান খানের লেখা প্রথম ছড়ার বই
‘হাট্ টিমা টিম’ এর প্রচ্ছদ এবং শিরোনাম কবিতা। ছবিঃ উইকিপিডিয়া


১৮৯৯ সালে ভারতের কোলকাতার সিটি বুক সোসাইটি প্রকাশিত
“খুকুমণির ছড়া” বইয়ের ১৩ তম সংষ্করণের ৩৭ নাম্বার পৃষ্ঠায়
“হাট্টিমাটিম টিম” ছড়াটি পাওয়া যায়। যেটা যোগীন্দ্রনাথ সরকারের সংকলিত একটা বই।

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া





হাট্টিমাটিম



টাট্টুকে আজ আনতে দিলাম
বাজার থেকে শিম
মনের ভুলে আনল কিনে
মস্ত একটা ডিম।

বলল এটা ফ্রি পেয়েছে
নেয়নি কোনো দাম
ফুটলে বাঘের ছা বেরোবে
করবে ঘরের কাম।

সন্ধ্যা সকাল যখন দেখো
দিচ্ছে ডিমে তা
ডিম ফুটে আজ বের হয়েছে
লম্বা দুটো পা।

উল্টে দিয়ে পানির কলস
উল্টে দিয়ে হাঁড়ি
আজব দু`পা বেড়ায় ঘুরে
গাঁয়ের যত বাড়ি।

সপ্তা বাদে ডিমের থেকে
বের হলো দুই হাত
কুপি জ্বালায় দিনের শেষে
যখন নামে রাত।

উঠোন ঝাড়ে বাসন মাজে
করে ঘরের কাম
দেখলে সবাই রেগে মরে
বলে এবার থাম।

চোখ না থাকায় এ দুর্গতি
ডিমের কি দোষ ভাই
উঠোন ঝেড়ে ময়লা ধুলায়
ঘর করে বোঝাই।

বাসন মেজে সামলে রাখে
ময়লা ফেলার ভাঁড়ে
কাণ্ড দেখে টাট্টু বাড়ি
নিজের মাথায় মারে।

শিঙের দেখা মিলল ডিমে
মাস খানিকের মাঝে
কেমনতর ডিম তা নিয়ে
বসলো বিচার সাঁঝে।

গাঁয়ের মোড়ল পান চিবিয়ে
বলল বিচার শেষ
এই গাঁয়ে ডিম আর রবে না
তবেই হবে বেশ।

মনের দুখে ঘর ছেড়ে ডিম
চলল একা হেঁটে
গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে
ডিম গেলো হায় ফেটে।

গাঁয়ের মানুষ একসাথে সব;
সবাই ভয়ে হিম
ডিম ফেটে যা বের হলো তা
হাট্টিমাটিম টিম।

হাট্টিমাটিম টিম
তারা মাঠে পারে ডিম
তাদের খাড়া দুটো শিং
তারা হাট্টিমাটিম টিম।

Hattimatim Tim - Sonamonider Chhora Kobita - সোনামণিদের ছড়া কবিতা - www.sahittopata.com



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ